জ্যোৎস্নারাতের ভূত
ওই না দেখে আমার মাথা বন বন করে ঘুরতে লাগল। আমি মামাকে জাপটে ধরে রেখেছি। মামারও দেখি আমার মতো দশা। এরই মধ্যে দাদা ছুটে গিয়ে ভূতের কাছে হাজির। প্রথম লাঠি দিয়ে একে একে দুটো হাতই ভেঙে দেয়। এরপর পায়ে জোরে জোরে বাড়ি মারলে ভূতটা নুয়ে পড়ে। দাদা তখন চিৎকার করে আমাদের ডাকছে।' তোমরা এখানে এস। দ্যাখ, ভূতটা মেরে ফেলেছি।
আমি জানি ভূত কখনও মরে না। তাই মামার হাত ধরে ধরে ভয়ে ভয়ে এগোই। গিয়ে দেখি একটা কলাগাছ। সেই ভূত। আমার আর মামার যেন প্রাণ ফিরে এলো। মামাও হাসে, আমিও হাসি। হাসতে হাসতে আমাদের পেটে খিল ধরে যায়। দাদা বলল, 'ভূত দেখা এবং মারা সবই হল। এখন চল। নানাভাই আমাদের জন্য বসে আছেন।' ভোর হয় হয়। এমন সময় আমরা পৌঁছে গেলাম। দৌড়ে নানাভাইয়ের কোলে বসে বললাম, 'আমার জন্য তোমার মনটা কাঁদছিল?'
'হ্যাঁরে। তোকে না দেখলে আমার কিচ্ছু ভালো লাগে না।' 'জানো নানা, আজ না আমরা ভূতের পাল্লায় পড়েছিলাম। দাদা না থাকলে আমাকে আর মামাকে তো তোমরা খুঁজেই পেতে না।' এ কথা শুনে নানাভাই তো হেসেই খুন। বললেন, 'ওটা তোদের চোখের ভুল।' এদিকে সব শুনে নানি তো মহা ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ছুটে গিয়ে পানি পড়া নিয়ে এলেন। বললেন, 'ওদের তিনজনকে পানি পড়া খাইয়ে দিই। কী ভীষণ ব্যাপার, ভূতে যখন ধরেছে তখন এত সহজে ছাড়বে না। আবার সুযোগ পেলেই ধরবে।' আমি বলি, নানি, আগে শোন না।' একে একে সব কথা খুলে বললাম। নানি যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন। 'যাক বাঁচা গেল। এ যাত্রায় তোরা আসল ভূতের পাল্লায় পড়িসনি। তবে পড়তে কতক্ষণ? নে, একটু একটু করে পানি পড়া খেয়ে নে।'
নানাভাই তখন নানিকে উদ্দেশ্য করে বললেন, 'শোনো, তোমার ওই জিনিস আর খাওয়ার দরকার নেই। এবারে ওদের ভুল ভেঙেছে। পৃথিবীতে ভূতটুত বলে কিচ্ছু নেই। আসলে ভূত হল আমাদের চোখের ও মনের ভুল।' নানি মুখ ঝামটা দিয়ে পড়া পানির বোতলটা হাতে করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন,।